
পর্যায়বৃত্ত ধর্ম ও রাসায়নিক বন্ধন-৫, রসায়ন ১ম পত্র
উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন ১ম পত্র
অধ্যায়-৩(পর্যায়বৃত্ত ধর্ম ও রাসায়নিক বন্ধন)
লেকচার নং-০৫
পাঠের বিষয় : রাসায়নিক বন্ধন, আয়নিক বন্ধন, সমযোজী বন্ধন, সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধন, অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড(NH4Cl) যৌগে কী কী বন্ধন আছে ? ব্যাখ্যা
১. রাসায়নিক বন্ধন (Chemical bonds) :
অনুতে বিদ্যমান পরমানুসমূহ যে আকর্ষন শক্তি দ্বারা যুক্ত থাকে তাকে রাসায়নিক বন্ধন বলে।
২. আয়নিক বন্ধন :
পরমানুসমূহ পরস্পরের মধ্যে ইলেকট্রন আদান প্রদান করে দুই বিপরীত ধর্মী আয়ন সৃষ্টির মাধ্যমে পরস্পর আকর্ষিত হয়ে যে রাসায়নিক বন্ধন গঠন করে তাকে আয়নিক বন্ধন বলে।
উদাহরনসরূপ, NaCl অনুতে আয়নিক বন্ধন বিদ্যমান।
এখানে Na ধাতু এবং Cl একটি অধাতু । উহাদের মধ্যে তড়িৎ ঋনাত্মকতার পার্থক্য উচ্চ। তাই উহাদের মধ্যে ইলেকট্রন আদান প্রদান দ্বারা আয়নিক বন্ধন গঠিত হয়।
আয়নিক বন্ধনের শর্ত :
(i) একটি ধাতু ও একটি অধাতুর মধ্যে ইলেকট্রন দান - গ্রহনের মাধ্যমে আয়নিক বন্ধন গঠিত হয়।
(ii) বিশুদ্ধ আয়নিক বন্ধনের জন্য ধাতব মৌলটির অধিকতর নিম্ন আয়নিকরন শক্তি এবং অধাতব মৌলটির অধিকতর উচ্চ ইলেকট্রন আসক্তি থাকা প্রয়োজন।
(iii) উল্লেখ্য যে, গঠিত আয়নিক যৌগের ল্যাটিস শক্তির মান যত উচ্চ হয় সংশ্লিষ্ট আয়নিক বন্ধনটি তত অধিক স্থিতিশীল হয়।
(iv) একটি ধাতব এবং একটি অধাতব মৌলের পরমানুদ্বয়ের তড়িৎ ঋনাত্মকতার পার্থক্য 1.9 হলে বন্ধনটি আয়নিক এবং তড়িৎ ঋনাত্মকতার পার্থক্য ≤1.9 হলে বন্ধনটি সমযোজী বৈশিষ্ট্য প্রবন আয়নিক হয়ে থাকে।
আয়নিক বন্ধনের কতিপয় উদাহরন :
৩. সমযোজী বন্ধন :
পরমানুসমূহ পরস্পরের মধ্যে ইলেকট্রন শেয়ার ঘটিয়ে যে রাসায়নিক বন্ধন গঠন করে তাকে সমযোজী বন্ধন বলে।
উদাহরনসরূপ, HCl অনুতে সমযোজী বন্ধন বিদ্যমান।
এখানে H এবং Cl উভয় মৌলই অধাতু। উহাদের তড়িৎ ঋনাত্মকতার পার্থক্য নিম্ন । তাই উহারা পরস্পরের মধ্যে বেজোর ইলেকট্রনদ্বয়ের শেয়ার ঘটিয়ে সমযোজী বন্ধন গঠন করে।
অনুরূপ উদাহরন :
সমযোজী বন্ধনের শর্ত :
(i) সময়োজী বন্ধন সাধারনত: দুটি অধাতব মৌলের মধ্যে হয়।
(ii) সাধারন অবস্থায় কিংবা উত্তেজিত অবস্থায় মৌলদ্বয়ের পরমানুর যোজ্যতা স্তরে এক বা একাধিক বেজোড় ইলেকট্রন থাকতে হয়।
(iii) পরমানুদ্বয়ের যোজ্যতা স্তরের বেজোড় ইলেকট্রনের শেয়ার ঘটতে হয়।
(iv) দুটি অধাতব মৌলের পরমানুদ্বয়ের তড়িৎ ঋনাত্মকতার পার্থক্য ≤0.4 হলে বন্ধনটি ননপোলার সমযোজী এবং তড়িৎ ঋনাত্মকতার পার্থক্য 0.4 হলে বন্ধনটি পোলার সমযোজী হয়ে থাকে।
৪. সন্নিবেশ বন্ধন বা সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধন :
যে সমযোজী বন্ধনে শেয়ারকৃত ইলেকট্রনদ্বয় শুধুমাত্র একটি পরমানু থেকে আসে অথচ উভয় পরমানুই সমভাবে শেয়ার করে তাকে সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধন বলে।
উদাহরনসরূপ, অ্যামোনিয়াম আয়ন গঠনের ক্ষেত্রে সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধন ব্যাখ্যা করা হল:
সন্নিবেশ বন্ধনের শর্ত :
সন্নিবেশ বন্ধন গঠনের জন্য একটি পরমানু বা অনু বা আয়নের সংশ্লিষ্ট পরমানুরযোজ্যতা স্তরে অন্তত একজোড়া মুক্ত ইলেকট্রন থাকতে হবে। একে ইলেকট্রন দাতা বলে । অপরদিকে, অপর পরমানুর যোজ্যতা স্তরে এক বা একাধিক ফাঁকা অরবিটাল সম্বলিত অস্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস অবশ্যই থাকতে হবে। তাহলেই কেবল তাদের মধ্যে সন্নিবেশ বন্ধন সম্ভব হবে।
৫. অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড(NH4Cl) যৌগে কী কী বন্ধন আছে ? ব্যাখ্যা কর।
উ : অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড যৌগে মূলত: আয়নিক, সমযোজী ও সন্নিবেশ এই তিন প্রকারের বন্ধন বিদ্যমান।
ব্যাখ্যা :
আয়নিক বন্ধন : অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড যৌগে অ্যামোনিয়াম আয়ন এবং ক্লোরাইড আয়নের মধ্যে স্থির বৈদ্যুতিক শক্তির আকর্ষনের মাধ্যমে আয়নিক বন্ধন উপস্থিত রয়েছে।
সমযোজী বন্ধন ও সন্নিবেশ বন্ধন :
অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড অনুস্থ অ্যামোনিয়াম আয়ন গঠনে সমযোজী ও সন্নিবেশ বন্ধন বিদ্যমান। এক্ষেত্রে N পরমানুটি উহার তিনটি বেজোড় ইলেকট্রন ব্যবহার করে তিনটি সমযোজী বন্ধন এবং অবশিষ্ট মুক্তজোড় ইলেকট্রন ব্যবহার করে একটি সন্নিবেশ বন্ধন গঠন করে।
A K M Ziaul Hasan
M Sc in Chemistry(1st class)
Assistant Professor,Department of Chemistry,
IDEAL COLLEGE,Dhanmondi, Dhaka
Gmail : Ziaul.hasan22@gmail.com
https://ziaulhasan.com
Mob. 01715-736525(7.0pm to 11.0pm)